মেঘে মেঘে অনেক বেলা হল। বর্ণচোরা আমের মত নিজের বয়স বেড়ে হল প্রায় চুয়াল্লিশ। এর মাঝে কত উত্থান-পতন, কত জীবন-মরণ, কত সুখ-দুঃখের কাহিনী ঘটে গেছে আমার।
পেটের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে এক সময় চব্বিশ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকি। পরবর্তীতে বারাে দিন ভর্তি থেকে রিয়াদ কিং সউদ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে। গলব্লাডার অপারেশনের মাধ্যমে সে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাই। এক সময় আলরাস শহরের ভিতরে কুয়াশার ন্যায় বৃষ্টির সময় গাড়িতে ড্রাইভারের পাশে বসেছিলাম। রাস্তার মাঝে এক ইলেক্ট্রিক পপালে ধাক্কা মারলে আমার পায়ে আঘাত লাগে, মাথা ফেটে যায়, হাসপাতালে সিলাই হয়।
আরাে কতবার এক্সিডেন্টের মুখ থেকে বেঁচে গেছি। গাড়ি চালাতে গিয়েও মরণকে স্মরণ করে সীট-বেল্ট বাঁধতে হয় সকলকে। প্লেনে বসেও মরণকে স্মরণ করে সীট-বেল্ট বাঁধতে হয়। বড় বড় আলেম-উলামা চলে গেলেন, আত্মীয়-স্বজন মারা যাচ্ছে, অনেক সঙ্গী-সাথীরাও সঙ্গ ছেড়ে বিদায় নিচ্ছে। আপনাকে আমাকেও সকলের নিকট থেকে বিদায় নিতে হবে।
জীবনের এমন মুহূর্তও আসে, যখন আর বাঁচতে ইচ্ছা হয় না। জানাযা, দুর্ঘটনা, দুর্যোগ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ দেখেও জীবনের মূল্যহীনতা প্রকাশ পায়।
রক্তপিপাসু দুশমনও থাকতে পারে আমার অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে। মরণের পাতা ফাদে যে কোন সময় পা ফেঁসে যেতে পারে।
কখনাে কখনাে নির্জনে জীবনের কথা বসে ভাবি, পরকালের পাথেয় কি সংগ্রহ করলাম? কবরের ঘর কি সঠিকভাবে বানাতে পেরেছি? মনের আবেগে চোখে। পানি আসে। মহান প্রতিপালকের উপর ভরসাই একমাত্র সম্বল।