আল্লাহ তা’আলার জন্য ছুরত (রূপ-আকার) ছিফাত সাব্যস্ত। তাঁর বড়ত্ব ও মর্যাদার জন্য যেমন আকার শােভনীয়, তার জন্য সেরকম সুরতই সাব্যস্ত। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত আল্লাহর জন্য সুরত (আকার-রূপ) ছিফাত সাব্যস্ত করেন। এটা তার সত্তাগত ছিফাত। জাহমীয়া এবং তাদের অনুসারী অন্যান্য ফির্কা এটাকে অস্বীকার করেছে।
ইমাম ইবনে কুতাইবা রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি মনে করি, আল্লাহর আকার ছিফাত তার হাত, আঙ্গুল, চোখ ইত্যাদি ছিফাতের চেয়ে বিস্ময়কর কিছু নয়। এতে অবাক হওয়ারও কিছু নেই। তবে কেউ কেউ এতে এজন্য অবাক হয়ে থাকে যে, আল্লাহর হাত ও চোখ এবং অন্যান্য ছিফাতের বিবরণ কুরআনুল কারীমে এসেছে। কিন্তু আল্লাহর সুরত বা আকার ছিফাতটি কুরআনে আসেনি। এটা এসেছে ছহীহ হাদীছে।
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদাহ হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাতে যা এসেছে, সবগুলােতেই বিশ্বাস করতে হবে। কোনােটিই তারা অস্বীকার করেন এবং কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে তারা পার্থক্য করেন না। আল্লাহর কোনাে কোনাে ছিফাত মেনে নিয়ে অন্য কোনােটিকে অস্বীকার করলে সবগুলােকেই অস্বীকার করা হয়েছে বলে ধরা হবে। তাই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অনুসারীগণ কুরআন ও সুন্নাহয় বর্ণিত আল্লাহ তা’আলার সমস্ত ছিফাতকে সৃষ্টির ছিফাতের সাথে তুলনা না করে একবাক্যে একসাথে স্বীকার করে নেন।
যারা বলে, আল্লাহর আকার আছে, এটা বলা যাবে না এবং আল্লাহর আকার নেই, এটাও বলা যাবে না, তাদের কথা আসলে ঐসব লােকদের কথার মতােই, যারা বলে আল্লাহ উপরেও না, নীচেও না, ডানেও না, বামেও না, পিছনেও না এবং সামনেও না। এসব কথা যুক্তবাদী জাহমীয়া সম্প্রদায় থেকেই এসেছে; এগুলাে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের কথা নয়।
আপনি যদি বলেন, আল্লাহর অস্তিত্ব আছে; কিন্তু আকার-আকৃতি নেই, তাহলে আপনার কথা দ্বারা শুধু আল্লাহর যিহনী অস্তিত্ব সাব্যস্ত হবে। আরশে আযীমে আল্লাহর অস্তিত্ব সাব্যস্ত হবে না। এতে করে অজান্তেই আপনি জাহমীয়াদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। কারণ, জাহমীয়ারা মস্তিষ্কের বাইরে আল্লাহর অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে না। তাই তাদের মতে আল্লাহ নিরাকার।