মূসা টোটেম রাজ্যে ফিরে এসেছেন। রাজা লুইস ইফ্রাইম ও রানি রিয়ানা ইফ্রাইম, মূসার আগমনে জরুরি সভা ডেকেছেন। বিশাল একটা হল ঘরে তারা দু’জনে বসে আছেন।
. চল্লিশ জন বিশালদেহী পিশাচ তাদের আসন গ্রহণ করেছে। সবাই মূসার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু মূসার আসার কোনো নাম নেই। ঘণ্টা দুয়েক অতিবাহিত হওয়ার পর মূসা গম্ভীরমুখে সভায় এসে আসন গ্রহণ করলেন। তাকে অনেকে পছন্দ করে না। তাই সবার মধ্যে চাপা গুঞ্জন শুরু হলো। রাজা লুইস নিয়ান্ডা রাজ্যের তিন রাজকন্যার কথা জিজ্ঞেস করতেই মূসা বললেন, ‘মাই লর্ড, ক্ষমা করবেন। তাদের বন্দি করতে আমি সক্ষম হইনি। তবে তাদের কনিষ্ঠ ভাইকে বন্দি করার প্রচেষ্টা চলছে।’
লিলির কথা গোপন করলেন মূসা। কেন করলেন তিনিই ভালো জানেন। এতদিন ধরে সবাই মূসার শুধু সফলতাই দেখে এসেছিল। কিন্তু আজ তার পরাজয় দেখে অনেকে মনের ভেতর উল্লাস করতে লাগল। একসাথে পাঁচজন উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘এখন কী বলবেন মাই লর্ড? তার এমন ব্যর্থতায় তাকে কি সেনাপতির পদে বহাল রাখবেন?’
কথাগুলো শেষ হয়নি, তার আগেই মূসা নিজের নগ্ন তলোয়ার চালালেন তাদের ওপরে। চোখের পলকে পাঁচ পিশাচের গর্দান কেটে সামনের টেবিলে পড়ে গড়াগড়ি খেলো। দাঁড়ানো অবস্থায় দেহগুলোর কাটা গলা হতে চিরিক দিয়ে রক্তের ফোয়ারা ছুটতে লাগল। মূসার এমন দুঃসাহস দেখে রাজা লুইস হতভম্ব হয়ে গেলেন। এত দুঃসাহস দেখানোর ক্ষমতা তার হয় কী করে!
. সভায় হট্টগোল শুরু হয়ে গেল। সুখ্যাতি যতটা না ছড়ায়, তার থেকে অখ্যাতির গন্ধ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। মূসার বেলায়ও তাই হলো। অনেকে সভা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলো। এতে মূসা আরও বেশি ক্ষেপে গিয়ে তার আসল চেহারা প্রকাশ করলেন। বিশাল আকৃতির চার হাতওয়ালা একটি দানব দরজা আগলে দাঁড়াল। তার চাহনি দেখে থরথর করে কাঁপতে লাগল উপস্থিত সব পিশাচেরা। মেঘের গর্জনের মতো হুংকার ছেড়ে মূসা বলে উঠলেন, ‘সভা শেষ হওয়ার আগে যদি কেউ এক কদম বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের দেহ হতে মস্তক বিচ্ছিন্ন করার গুরু দায়িত্ব আমার হাতে পড়বে।’
সময় লাগল না আর। মুহূর্তেই যে যার আসনে বসে পড়ল। মূসা এবার শান্ত হয়ে রাজার কাছে গিয়ে কুর্নিশ জানিয়ে বললেন, ‘মাই লর্ড, শত্রুর দল আমাদের সীমানায় পৌঁছে গেছে। তাই আমি ফিরে এসেছি। আমরা সবাই মিলে এই সময়টির জন্য অপেক্ষা করেছি এতদিন ধরে। এবার সময় এসেছে মোক্ষম চাল দেওয়ার। শত্রু যদি ঘরেই থাকে, তাহলে তাদের বাইরে কেন খুঁজব?’
. রাজা লুইস এই রাজ্য শক্তিশালী করতে কম বলি চড়াননি। এমনকি নিজের ভাই-বোনকেও ছাড় দেননি। নিজ হাতে তাদের হত্যা করেছেন জায়গা শক্তপোক্ত করার জন্য। তারপর পাশে পেয়েছেন মূসার মতো এমন একজন শক্তিশালী সেনাপতি, যিনি ভালো বিনা কোনোদিনই খারাপ করার রেকর্ড দেখাননি। তাই বিনাবাক্যেই মেনে নিলেন মূসার সমস্ত কথা।
. তার কথার সম্মান জানাতে আর কারো মতামত গ্রহণ না করে সভা সমাপ্ত করা হলো। সবাই সভাকক্ষ থেকে বের হয়ে গেলেও মূসা বের হলেন না। তিনি একের পর এক ছক কষতে মনোযোগ দিলেন। কীভাবে নিজেদের রাজ্য সুরক্ষিত রাখা যায় তা ভাবতে থাকলেন।
Title |
বিষবার্তা |
Author |
নাফিসা মুনতাহা পরী |
Publisher |
আলোর ঠিকানা প্রকাশনী |
Edition |
New edition |
Number of Pages |
128 |
Country |
Bangladesh |
Language |
Bengali |
Weight |
350 Gram |
Dimension |
21cm x 15cm x 1cm |