শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্যকৃতি বহতা নদীর মতো। বিচিত্র স্রোতে তা নিয়ত বহমান। প্রবাহের সমগ্রতায় গড়ে উঠেছে বলেই তাঁর সাহিত্য আশ্চর্য ক্লেদহীন। একালের এক অগ্রগণ্য সমালোচক যথার্থই লিখেছেন: নদীর কোনও ভান নেই-শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ঔপন্যাসিক সত্তাতেও কোনও ভণিতা নেই। এক প্রাণবন্ত শৈশবস্মৃতি, এক যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞান-সংকট এবং শান্ত নিরাসক্ত অবলোকন-সবার উপরে এক সর্বতোসুভদ্র আস্তিক্য তাঁর লেখক-জীবনকে গড়ে তুলেছে। বাংলা সাহিত্যের বিরল লেখকদের অন্যতম শীর্ষেন্দুর প্রধান শক্তি তাঁর ওই আস্তিক্যবোধ।
জীবনের সকল সংশয়ের মধ্যেও তিনি এক অসংশয়িত উত্তরণের কথা উচ্চারণ করেন অপার সাহসে। তাই অন্তহীন দিশাহীনতার মাঝখানে দাঁড়িয়েও তিনি সাহসী। এখানে তিনি এক অনন্যস্রষ্টা। তাঁর কাছে আস্তিক্য, জীবন-নিংড়ে-পাওয়া, সুখ-দুঃখের ঝাঁপি। এই ঝাঁপি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে সময়। শীর্ষেন্দুর যে-কোনও কাহিনীতে দেখি, চতুর্দিকের সমস্ত বিপন্নতা সত্ত্বেও মনুষ্যত্বের জন্য মানুষের মানবিক উৎকণ্ঠা দুর্মর। এই মুহূর্তে এক সংক্ষুব্ধ সময়ের মধ্যে দিয়ে জীবনের পারাপার। তবু তারই মধ্যে মানুষের পবিত্র স্বরূপকে তিনি খোঁজেন পরম মমতায়। তিনি বিশ্বাস করেন, কোথাও একটা আশ্রয় আছে, ফেরার জায়গা আছে। একালের অন্যতম এই শ্রেষ্ঠ লেখকের অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার নানা রসে পূর্ণ। জীবনের প্রতি কৌতুকস্নিগ্ধ দৃষ্টি তাঁর সবকটি উপন্যাসকে নিয়ে গেছে শিল্পিত উত্তরণের পথে। তাঁর সৃষ্ট চরিত্ররা জানে, তাঁরা জন্ম থেকে বহন করছে মৃত্যুবীজ। এক অবধারিত অন্ধকার সত্ত্বেও কোনও বৈমুখ্য বা বিরূপতা তাদের জীবনযাপনের ছন্দকে ভেঙে দিতে পারেনি। শৈলী ও নির্মিতিতে শীর্ষেন্দুর আত্মস্থ অথচ অনাসক্ত ভঙ্গি এবং বীক্ষণ বাংলা কথাসাহিত্যে অন্য মাত্রা সংযোজন করেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর প্রকাশিত হচ্ছে লেখকের দশটি উপন্যাস। এই সংকলনে আছে বিভিন্ন সময়ে লেখা এই উপন্যাসগুলি: দিন যায়, বাসস্টপে কেউ নেই, আশ্চর্য ভ্রমণ, লাল নীল মানুষ, নীলু হাজরার হত্যারহস্য, ঘরজামাই, জীবনপাত্র, বাঘু মান্নার বরাত, অসুখের পরে এবং ঋণ।
Title |
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় দশটি উপন্যাস |
Author |
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় |
Publisher |
আনন্দ পাবলিশার্স |
Edition |
New edition |
Number of Pages |
594 |
Country |
India |
Language |
Bengali |
Weight |
1200 Gram |
Dimension |
24cm x 18cm x 4cm |