Product Specification & Summary


হে কুরবানী দাতা অনুধাবন করুন! কুরবানীর নিয়ত করার সাথে সাথে স্মরণ করুন প্রায় সাড়ে চার হাযার বছর পূর্বে ইব্রাহীম ও ইসমাঈলের অশ্রুতপূর্ব কুরবানীর কথা। স্মরণ করুন, আল্লাহর হুকুমে বৃদ্ধ বয়সের চোখের মণি একমাত্র সন্তান ইসমাঈলকে নিজ হাতে ছুরি চালিয়ে হত্যায় উদ্যত পিতা ইব্রাহীমের কথা। স্মরণ করুন, সেই অটুট আত্মনিবেদনের তাৎক্ষণিক পুরস্কার হিসাবে জীবন্ত ইসমাঈলকে ফিরে পাওয়ার আনন্দাপ্লুত পিতার অনন্য চেহারার কথা। স্মরণ করুন, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর হুকুমে তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সৃষ্টিজগতের সর্বাধিক প্রিয় বস্ত্তকে উৎসর্গ করার অতুলনীয় স্মৃতির কথা। ত্যাগ ও ভোগের মিলিত আনন্দ নিয়ে মুমিনের উপর বিধিবদ্ধ হয়েছে কুরবানীর ইলাহী বিধান। যা মুমিন হৃদয়ে সৃষ্টি করে শয়তানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়ার আপোষহীন উত্থান। ভোগের আনন্দ ক্ষণিক। কিন্তু ত্যাগের আনন্দ স্থায়ী ও মহিমান্বিত। ভোগের আনন্দ দুনিয়াতেই সীমিত। কিন্তু ত্যাগের আনন্দ দুনিয়া ও আখেরাতে পরিব্যপ্ত। ইসলাম ত্যাগ ও ভোগের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করেছে ও আল্লাহর জন্য ত্যাগকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। ত্যাগ মানুষকে বিনয়ী, সহনশীল, সংযমী ও সর্বোপরি মানবতাবাদী হ’তে শিক্ষা দেয়। কুরবানী উপলক্ষে ঈদুল আযহা সেই মহান ত্যাগেরই এক অনন্য উৎসব। কুরবানীর মূল প্রেরণা হ’ল সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠভাবে আনুগত্য প্রকাশ করা। বিত্তের মোহ, ভোগ-বিলাসের আকর্ষণ, সন্তানের স্নেহ, স্ত্রীর মহববত সবকিছুর ঊর্ধ্বে আল্লাহর প্রতি নিজেকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্পণ করে দেওয়া। কেননা বান্দা যখন আল্লাহর নিকটে নিজেকে সোপর্দ করে দেয়, তখন আল্লাহ তার পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তাঁর পরিবার ছিলেন এমনই এক আত্মনিবেদন ও আত্মসমর্পণের অনন্য প্রতীক। আল্লাহর প্রতি ইব্রাহীমের নিখাদ আনুগত্য আমাদেরকে আকুলিত করে। পিতার ছুরির নীচে কুরবানী হওয়ার জন্য পুত্র ইসমাঈলের আত্মসমর্পণ ও নির্ভেজাল আনুগত্য আমাদের ব্যাকুলিত করে। প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে শিহরিত করে তোলে। একমাত্র সন্তান ইসমাঈল ও স্ত্রী হাজেরাকে মক্কার নির্জন প্রান্তরে আল্লাহর যিম্মায় রেখে বুকে পাষাণ বেঁধে যখন ইব্রাহীম ফিরে যাচ্ছেন, তখন উৎকণ্ঠিত হাজেরা পিছু পিছু এগুচ্ছেন আর বলছেন, ওহে স্বামী! এ বিরান ভূমিতে আপনি আমাদের নিঃসঙ্গ ফেলে যাচ্ছেন কেন? নির্বাক ইব্রাহীমের অসহায় দৃষ্টি! জবাব না পেয়ে বিবি হাজেরা ঈমানী তেজে বলে ওঠেন, তাহ’লে কি আল্লাহ আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন? ইব্রাহীম মাথা নাড়লেন, হ্যাঁ। তখন নির্ভীক হাজেরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলে উঠেন ‘তাহ’লে আল্লাহ কখনোই আমাদের ধ্বংস করবেন না’ (বুখারী হা/৩৩৬৪)। ইতিমধ্যেই একে একে পার হয়ে গেল ১৩/১৪টি বছর। সন্তানের প্রতি গভীর স্নেহে সিক্ত পিতার উপর নেমে এল এক কঠিন পরীক্ষা। আল্লাহর হুকুমে নিজ সন্তানকে নিজ হাতে কুরবানী করার ভয়ংকর আত্মত্যাগের পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় উত্তরণ ছিল তাঁর জন্য আল্লাহ প্রেমের এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত। তিনি জানতেন না যে, আল্লাহ সন্তান কুরবানী চাননি, চেয়েছিলেন ইব্রাহীমের আনুগত্যের পরীক্ষা নিতে। আর সে কারণেই বেঁচে গেলেন ইসমাঈল। পুত্রের বদলে কুরবানী হ’ল দুম্বা। চালু হ’ল ত্যাগ ও ভোগের আনন্দপূত ঈদুল আযহার চিরস্থায়ী বিধান। আল্লাহর ভালোবাসার নিকট পুত্রের ভালোবাসা যে গৌণ, সেটাই প্রমাণ করেন ইব্রাহীম। এর চাইতে আল্লাহ প্রেমের বড় উদাহরণ পৃথিবীতে আর আছে কি? দুনিয়া নয়, আখেরাতই যে মুখ্য, সেটাই ছিল কুরবানীর সবচেয়ে বড় শিক্ষা। তৎকালীন পুঁতিগন্ধময় সমাজ ছিল শয়তানের আনুগত্যে পূর্ণ। শিরক আর অনৈতিকতায় ভেসে চলছিল সমাজ। এমনি সময় আল্লাহর প্রতি ইব্রাহীমের অনন্য আনুগত্য ছিল এক বৈপ্লবিক ঈমানী জাগরণ। সে জাগরণ রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক নয়; বরং তা ছিল নৈতিক ও মানবিক জাগরণ। যে জাগরণের ঢেউয়ে তৎকালীন ইরাকী সমাজে সৃষ্টি হয় পরিবর্তনের নতুন চমক। নিভে যায় নমরূদের জ্বলন্ত হুতাশন। সেদিনের ন্যায় আজকের বিশ্ব ফেলে আসা নমরূদী সমাজ ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি। দুর্নীতির পঙ্কে আকণ্ঠ নিমজ্জিত আজ সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তর। মূল্যবোধ আজ তিরোহিত। ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মনুষ্যত্ব পরাভূত। তুচ্ছ দুনিয়ার লক্ষ্যে আখেরাত বিসর্জনের প্রতিযোগিতা চলছে সর্বত্র। এ অধঃপতিত সমাজকে টেনে তোলার জন্য চাই ইব্রাহীমী তাক্বওয়াশীল নেতৃত্ব ও ইসমাঈলী আনুগত্যশীল একদল অকুতোভয় চেতনাদীপ্ত মানুষ। নিঃসন্দেহে ইব্রাহীমী ঈমান ও ইসমাঈলী ত্যাগের মহান আদর্শই পারে জাতির হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে। তাই কুরবানীর পশুর গলায় ছুরি চালানোর আগে নিজের মধ্যে লুক্কায়িত পশুত্বের গলায় ছুরি চালানো আবশ্যক। জীবনের সর্বক্ষেত্রে ভোগের বদলে মানবিকতার উত্থান হৌক! আত্মত্যাগের স্বচ্ছ চেতনায় আলোকিত হৌক আমাদের সার্বিক জীবন। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইব্রাহীমী ত্যাগের প্রতিফলন ঘটুক, আল্লাহর নিকটে সেটাই আমাদের একান্ত প্রার্থনা। আল্লাহ আমাদেরকে ও আমাদের পরিবারকে তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন- আমীন!
Title মাসায়েলে কুরবাণী ও আক্বীক্বা
Author মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
Publisher হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
Edition New Edition
Number of Pages
Country Bangladesh
Language Bengali
Weight 50 Gram
Dimension 21cm x 15cm x 1cm


Related Products


0%

মুসলিম জাতির দুর্দশার কারণ ও উত্তরণের উপায়

শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সালেহ আল-উসাইমীন

15     15

30%

ইসলামের সচিত্র গাইড

আই. এ. ইবরাহীম

102     146

0%

চিন্তাপরাধ

আসিফ আদনান

190     190

0%

অপরিহার্য শরীয়াহ

শাইখ আব্দুর রাহমান ইবনু সালিহ আল-মাহমুদ

260     260



Warning: Undefined array key "user_remember" in /home/u661805974/domains/sushikkha.in/public_html/view_more.php on line 735

Recent View Product










© SUSHIKKHA.IN




× সকল বই ডিসকাউন্ট বই রিকোয়েস্ট